খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. ফারুক হোসেন বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম কানুন অনুযায়ী ছোট বড় কোন কাজই ভাইস চ্যান্সেলরের অবর্তমানে করা সম্ভব নয়। একই সাথে যে নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলাজনিত ঝুঁকির মধ্যে একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ আছে, এই ঝুঁকিগুলোর দায়িত্ব নেওযার জন্য একজন অভিভাবক দরকার।
বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান অচলাবস্থা নিরসন এবং দ্রæত শিক্ষা কার্যক্রম চালুর জন্য অনতিবিলম্বে ভাইস-চ্যান্সেলর নিয়োগের দাবিতে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকবৃন্দের যৌথ মানববন্ধনে বক্তৃতায় এসব কথা বলেন তিনি। বুধবার বেলা ১১ টায় দুর্বার বাংলার পাদদেশে কুয়েট শিক্ষক সমিতি এ মানববন্ধনের আয়োজন করে। মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. সাহিদুল ইসলাম।
ফারুক হোসেন বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে একটা ক্রান্তিকালের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। বিশ্ববিদ্যালয়টা ফেব্রæয়ারি থেকে বন্ধ অবস্থায় আছে। মধ্যবর্তী ভাইস চ্যান্সেলর এসেছিলেন, উনি চলে গেছেন বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ অবস্থাতেই। অভিভাবক শুন্য কুয়েটে ভিসি না থাকার কারণে একটি কাজও করা সম্ভব হচ্ছেনা। ভিসি নিয়োগে বিলম্ব দেখে বিশ্ববিদ্যালয়, রেজিস্টার, ডীনদের পক্ষ থেকে মে মাসের শেষ থেকে দফায় দফায় সরকার, ইউজিসি, মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠাতে শুরু করি। নিজেরা গিয়েও সাক্ষাৎ করি। সর্বশেষ ২৭ জুলাইও আমরা ইউজিসিতে গিয়ে এ বিষয়ে আলোচনা করি। আমরা আশ্বস্ত হয়েছি যে তারা সমস্যা বুঝতে পেরেছেন।
শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. সাহিদুল ইসলাম বলেন, ২০০৩ সালে বাংলাদেশের চারটি ইউনিভার্সিটি বিআইটি থেকে ইউনিভার্সিটিতে কনভার্ট হয়। ভিসি ছাড়া যে প্রতিষ্ঠান চলে না এর প্রথম ভুক্তভোগী হয় রুয়েট। ভিসি ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রায় দুই মাস অচল ছিল। বেতন ভাতাদি থেকে শুরু করে কোন ধরনের প্রশাসনিক কাজ হযনি। ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, জগন্নাথ এই চারটি ইউনিভার্সিটি ‘৭৩ সালের এ্যাক্ট অনুযায়ী চলে। ৭৩’র এ্যাক্টে ওই বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর একাডেমিক এবং প্রশাসনিক স্বায়ত্তশাসন রয়েছে। কিন্তু এর পরবর্তী কুয়েটসহ বাকি যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সেগুলো ৭১‘র এ্যাক্ট অনুযায়ী চলে। ৭১’র এ্যাক্ট অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর একাডেমিক স্বায়ত্তশাসন আছে, কিন্তু প্রশাসনিক স্বায়ত্তশাসন নেই।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা বলেন, গত পাঁচ মাস ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থবিরতা চলছে। আমরা আমাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে শংকিত। আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা এটা নিয়ে গভীরভাবে উদ্বেগ প্রকাশ করছি। পাশাপাশি আমাদের অভিভাবকেরাও উদ্বিগ্ন। আমরা চাই বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক পরিবেশ দ্রæত ফিরে আসুক। শিক্ষা কার্যক্রম এবং আমাদের পরীক্ষা যেগুলো বাকি আছে সেগুলো দ্রæত চালু করার ব্যবস্থা করা হোক। সরকারের কাছে আমাদের দাবি, দ্রæত ভিসি নিয়োগ দিয়ে কুয়েটের স্বাভাবিক কার্যক্রম চালু করা হোক।
মানববন্ধনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন, মেকানিক্যাল অনুষদের ডীন প্রফেসর ড. সুলতান মাহমুদ, সিভিল ইঞ্জিনিযারিং অনুষদের ডীন প্রফেসর ড. মো. হারুন অর রশিদ, ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ডীন প্রফেসর ড.রফিকুল ইসলাম, মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রধান প্রফেসর ড. ইলিয়াস, ইসিইর বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর ড. মনির হোসেন, ছাত্র কল্যাণ পরিচালক প্রফেসর ড.আব্দুল্লাহ ইলিযাস আক্তার, এনার্জি সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রধান প্রফেসর ড. হাসান, অভিভাবকদের পক্ষ থেকে বিথী আক্তার, শিক্ষার্থী আবু সায়েম প্রমূখ।

