
উত্তর কোরিয়া অভিযোগ করেছে, সীমান্ত বন্ধের কাজ চলাকালে তাদের সৈন্যদের লক্ষ্য করে দক্ষিণ কোরিয়ার সেনারা গুলি চালিয়েছে, যা পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করে তুলতে পারে। শনিবার পিয়ংইয়ংয়ের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে জানানো হয়, এই ঘটনাটি সীমান্ত এলাকায় অস্থিতিশীলতা তৈরি করছে এবং সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার ঝুঁকি বাড়াচ্ছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার নতুন প্রেসিডেন্ট লি জে মিউং উত্তেজনা প্রশমনের আশ্বাস দিলেও উত্তর কোরিয়া জানিয়েছে, সিউলের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে তাদের কোনো আগ্রহ নেই। পিয়ংইয়ংয়ের সেনা কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট জেনারেল কো জং চোল জানান, গত মঙ্গলবার সীমান্ত স্থায়ীভাবে বন্ধের কাজ করার সময় দক্ষিণ কোরিয়ার সেনারা অন্তত ১০ বার সতর্কতামূলক গুলি চালায়। তিনি এটিকে “গুরুতর সামরিক উসকানি” হিসেবে উল্লেখ করেন এবং সতর্ক করেন, এতে সীমান্ত এলাকায় উত্তেজনা আরও বেড়ে যেতে পারে।
দক্ষিণ কোরিয়া এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে এই অভিযোগের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
এর আগে চলতি বছরের এপ্রিলে সীমান্ত এলাকায় একই ধরনের একটি ঘটনা ঘটে, যখন উত্তর কোরিয়ার কয়েকজন সৈন্য সাময়িকভাবে সীমান্ত অতিক্রম করলে দক্ষিণ কোরিয়ার সেনারা সতর্কতামূলক গুলি চালিয়েছিল।
উত্তর কোরিয়া আগেই জানিয়েছিল, তারা সীমান্ত পুরোপুরি বন্ধ করার পরিকল্পনা নিয়েছে। এমনকি ভুল বোঝাবুঝি বা দুর্ঘটনাজনিত সংঘর্ষ এড়াতে মার্কিন বাহিনীর কাছে একটি বার্তাও পাঠায়। পরবর্তীতে তারা উত্তর-দক্ষিণ কোরিয়াকে সংযুক্তকারী সড়ক ও রেলপথের কিছু অংশ ধ্বংস করে দেয়।
কো জং সতর্ক করে বলেন, “যদি সীমান্ত বন্ধের কাজে বাধা দেওয়া হয়, আমরা এটিকে ইচ্ছাকৃত উসকানি হিসেবে দেখব এবং যথাযথ প্রতিক্রিয়া জানাব।”
লি জে মিউংয়ের পূর্বসূরি উত্তর কোরিয়ার প্রতি তুলনামূলক কঠোর অবস্থান নেওয়ায় দুই দেশের সম্পর্ক অতীতে ন্যূনতম পর্যায়ে নেমে গিয়েছিল। তখন সীমান্তে প্রচারণামূলক কার্যক্রম চলত, এমনকি উত্তর কোরিয়া বেলুনে করে আবর্জনা পাঠাত এবং দক্ষিণ কোরিয়া লাউডস্পিকারে কে-পপ গান বাজাত। লি ক্ষমতায় আসার পর এই প্রচারণা বন্ধ হলেও সীমান্ত উত্তেজনা পুরোপুরি প্রশমিত হয়নি।
লি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, কোনো পূর্বশর্ত ছাড়াই উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে সংলাপ চালিয়ে যাবেন এবং আস্থা পুনর্গঠনে কাজ করবেন। তবে কিম জং উনের বোন কিম ইয়ো জং স্পষ্ট জানিয়েছেন, দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে পিয়ংইয়ংয়ের কোনো আগ্রহ নেই।
দুই কোরিয়া এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে যুদ্ধাবস্থায় রয়েছে, কারণ ১৯৫০-৫৩ সালের কোরীয় যুদ্ধ শেষ হয়েছিল অস্ত্রবিরতিতে, কোনো শান্তিচুক্তিতে নয়।

