ভারতের হায়দরাবাদে জোরপূর্বক দেহ ব্যবসায় বাধ্য করা এক বাংলাদেশি কিশোরীকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় ফের আলোচনায় এসেছে বাংলাদেশ–ভারতজুড়ে সক্রিয় মানব পাচার চক্র।
হায়দরাবাদে বাংলাদেশি নারী উদ্ধারের এ ঘটনাই চতুর্থ। এর আগে খাইরতাবাদ, চাদেরঘাট ও বান্দলাগুডার যৌনপল্লি থেকেও একইভাবে একাধিক নারীকে উদ্ধার করেছে স্থানীয় পুলিশ। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তাদের মতে, শহরের এসব যৌনপল্লি বহুদিন ধরেই সংঘবদ্ধ মাফিয়াদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। শুধু বাংলাদেশ নয়, উজবেকিস্তান, রাশিয়া, ইউক্রেন, শ্রীলঙ্কা ও নেপাল থেকেও নারীদের এনে এভাবে দেহ ব্যবসায় নামানো হচ্ছে।
পুলিশ জানায়, বাংলাদেশের সীমান্ত অঞ্চল থেকে দালালরা নারীদের চাকরি ও ভালো জীবনের প্রলোভন দেখিয়ে ভারতে নিয়ে আসে। নৌপথ ও স্থলপথ ব্যবহার করে পাচার হওয়া এসব নারীদের ভারতে প্রবেশ করানো হয়। পরবর্তীতে জাল পরিচয়পত্র বানিয়ে তাদের বিভিন্ন শহরে ছড়িয়ে দেওয়া হয়।
এক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, দারিদ্র্য আর অসহায়ত্বকে পুঁজি করেই এই চক্র বাংলাদেশ থেকে নারী ও কিশোরীদের খুঁজে বের করে। কেউ শিকার বা মাছ ধরার ছদ্মবেশে, আবার কেউ চাকরির অফার দিয়ে নারীদের ফাঁদে ফেলে। ভারতে আসার পর স্থানীয় দালালদের মাধ্যমে তাঁদের যৌনপল্লিতে বিক্রি করে দেওয়া হয়।
সেন্ট্রাল সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার বোর্ডের (সিএসডব্লিউবি) এক গবেষণায় দেখা গেছে, ভারতে যৌনশোষণের শিকার নারীদের মধ্যে অন্তত ২ দশমিক ৭ শতাংশই বাংলাদেশের নাগরিক। এদের কলকাতা, দিল্লি, মুম্বাই ও হায়দরাবাদসহ বড় শহরে পাচার করা হয়।
হায়দরাবাদে বর্তমানে আত্তাপুর, বান্দলাগুডা, চিন্তালমেট, হিমায়াতসাগর রোড ও চম্পাপেট এলাকায় পাচার চক্র সক্রিয়ভাবে এসব অপরাধ পরিচালনা করছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

