১৫ আগস্টকে কেন্দ্র করে নগরীর বিভিন্ন স্থানে পোস্টার সাটিয়েছিল নিষিদ্ধ সংগঠন আওয়ামী লীগ। সোমবার রাতের আধারে দেয়ালে দেয়ালে লাগানো হয় পোস্টার। তবে মঙ্গলবার সকালে নগরবাসীর নজরে পড়তেই বিক্ষুব্ধ জনতা পোস্টার ছিড়ে ফেলেছে। এদিকে খবর পেয়ে সংশ্লিষ্টদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় নিতে তৎপর হয়ে উঠেছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী।
জানা গেছে, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ খুলনা মহানগর ও জেলা শাখার পক্ষে টানানো পোস্টারে শেখ মুজিবের ৫০ তম মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি জানানোর পাশাপাশি ‘তোমার আদর্শের শক্তি দিয়ে প্রিয় মাতৃভূমিকে অপশক্তি মুক্ত করবই’ শ্লোগান লেখা ছিল। সাথে ছিল ৭৫’এর ১৫ আগস্টে নিহতদের ছবি। নগরীর খালিশপুর ও খানজাহান আলী থানা এলাকার রাস্তার পাশে দেয়ালে ও বিদ্যুতের খুঁটিতে এগুলো লাগানো হয়েছিল।
যোগাযোগ করা হলে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা শাখার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তৈমুর ইসলাম বলেন, আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠন বিশেষ করে ছাত্রলীগ, যুবলীগ নেতাকর্মীরা জামিনে বেরিয়ে এসে আত্মগোপনে থেকে এসব পোষ্টারিং করছে এমন তথ্য আমাদেরকে কাছে রয়েছে। এছাড়া যারা আওয়ামী লীগের দোসর কিন্তু হিডেন অবস্থায় রয়েছে এমন বিভিন্ন ব্যবসায়ীরা মিছিল-পোষ্টারিং করার ক্ষেত্রে অর্থযোগান দিচ্ছে এমনও তথ্য রয়েছে। আমরা এসব বিষয়টি মাথায় রেখে যারা ঘটনার সাথে জড়িত তাদেরকে ধরতে অভিযান অব্যাহত রেখেছি।
এদিকে একাধিক সূত্রে জানা গেছে, গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার পলায়নের পর খুলনার আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা গা ঢাকা দেয়। বেশ কয়েকজন বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেফতারও হন। কিন্ত তাদের প্রায় সবাই জামিনে বেরিয়ে এসেছে। জামিনে বেরিয়ে ফের সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা করছে। গত ২৩ এপ্রিল নগরীর সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে থেকে গ্রেফতার হয়েছিলেন খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট এম এম মুজিবুর রহমান। তার মোবাইল চেক করে গোয়েন্দা সংস্থা জানতে পারে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার চাচাতো ভাই শেখ হেলাল উদ্দিন ও শেখ জুয়েলসহ ৩০/৪০ জনের সাথে মোবাইল হোয়্যাটস আপ, টেলিগ্রাম ও জুম এ্যাপসে কথা বলেছেন। তার মোবাইল কলরেকর্ড ও ব্যাংক একাউন্টে অস্বাভাবিক লেনদেনের বিষয়ে প্রমান পাওয়ার পর জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করার অনুমতি চায় পুলিশ। মন্ত্রণালয়ের অনুমতি পাওয়ার পর সোমবার অর্šÍবর্তী সরকারকে উৎখাতের ষড়যন্ত্রের অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে খুলনায় রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা করেছে ডিবি পুলিশ।
এছাড়া গত ৯ আগষ্ট শুক্রবার নাশকতা মামলায় খুলনা মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি শেখ সাকিবকে গ্রেফতার করে পুলিশ। শুক্রবার রাতে নগরীর সোনাডাঙ্গা থানাধীন আলীর ক্লাব সংলগ্ন হোটেল তাজমহল থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত সাকিব সোনাডাঙ্গা গীর্জা রোডের বাসিন্দা শেখ আ: জব্বারের ছেলে। গেল বছরের ৫ আগস্টের পর রাজনীতি পরিবর্তনের পর থেকে মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি শেখ সাকিব আত্মগোপনে ছিল।

