
বলিউডের কালজয়ী ছবি ‘থ্রি ইডিয়েটস’-এ মেজাজি অধ্যাপকের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন তিনি। সেই সংলাপ—‘আরে, কেহনা ক্যা চাহতে হো’—আজও ভক্তদের মুখে মুখে ফেরে, মিম হয়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অমর সম্পদে পরিণত হয়েছে। সেই সংলাপ বলা অভিনেতা অচ্যুত পোতদার আর নেই।
গতকাল সোমবার মহারাষ্ট্রের ঠানের জুপিটার হাসপাতালে শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন এই অভিনেতা। তাঁর বয়স হয়েছিল ৯১ বছর। কয়েক দিন ধরে শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন তিনি। আজ মঙ্গলবার ঠানেতেই তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে বলে পরিবার জানিয়েছে।
অচ্যুত পোতদারের মৃত্যুসংবাদে শোকস্তব্ধ হিন্দি ও মারাঠি চলচ্চিত্র অঙ্গন। সহকর্মী, ভক্ত ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা সামাজিক মাধ্যমে শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন তাঁকে। সবার কাছেই তিনি ছিলেন নম্র, অমায়িক এবং বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী এক চরিত্রাভিনেতা।
চার দশকের বেশি সময়ের অভিনয়জীবনে পোতদার ১২৫টির বেশি হিন্দি ও মারাঠি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। বাণিজ্যিক কিংবা সমালোচকদের প্রশংসিত—সব ধরনের ছবিতেই তিনি ছিলেন সমান স্বচ্ছন্দ।
তাঁর উল্লেখযোগ্য ছবির মধ্যে রয়েছে—‘আক্রোশ’, ‘অর্ধসত্য’, ‘তেজাব’, ‘পরিন্দা’, ‘রাজু বন গয়া জেন্টেলম্যান’, ‘দিলওয়ালে’, ‘রঙ্গিলা’, ‘বাস্তব’, ‘হম সাথ সাথ হ্যায়’, ‘পরিণীতা’, ‘লাগে রহো মুন্না ভাই’, ‘দাবাং ২’, ‘ভেন্টিলেটর’। এ ছাড়া তাঁকে দেখা গেছে ‘ভূতনাথ’, ‘চমৎকার’, ‘দামিনী’, ‘ফেরারি কা সওয়ারি’তেও।
ছোট পর্দাতেও ছিল তাঁর সমান সাফল্য। ‘ওয়াগলে কি দুনিয়া’, ‘ভারত এক খোঁজ’, ‘প্রধানমন্ত্রী’, ‘আহত’, ‘অমিতা কা অমিত’, ‘মিসেস তেন্ডুলকর’, ‘মাঝা হোশিল না’সহ বহু জনপ্রিয় ধারাবাহিকে অভিনয় করেছেন তিনি।
অভিনয়ে আসার আগে পোতদারের জীবনের পথ ছিল একেবারেই ভিন্ন। তিনি মধ্যপ্রদেশের রেওয়ার এক কলেজে অধ্যাপনা দিয়ে কর্মজীবন শুরু করেন। পরে যোগ দেন ভারতীয় সেনাবাহিনীতে এবং ১৯৬৭ সালে ক্যাপ্টেন পদে অবসর নেন। এরপর দীর্ঘ ২৫ বছর দায়িত্ব পালন করেন ইন্ডিয়ান অয়েলে। চাকরির পাশাপাশি মঞ্চে অভিনয় শুরু করেন তিনি। অবশেষে ৪৪ বছর বয়সে বড় পর্দায় অভিষেক হয় তাঁর।
দেরিতে অভিনয়ে আসা সত্ত্বেও দীর্ঘ চার দশকের ক্যারিয়ারে অচ্যুত পোতদার দর্শকের মনে এক অমলিন ছাপ রেখে গেছেন। তাঁর সংলাপ, উপস্থিতি আর অভিনয়শৈলী তাঁকে করে তুলেছে বলিউড ও মারাঠি ছবির অবিস্মরণীয় এক চরিত্রাভিনেতা।

