ডেস্ক রিপোর্টার || ভয়েজ অফ জাস্টিস

বার্তা বা ইমেইলের খসড়া তৈরি, বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর খোঁজা কিংবা একাকী সময়ে আলাপচারিতা—এমন নানা কাজে মানুষ এখন নিয়মিত ব্যবহার করছে চ্যাটজিপিটি বা অনুরূপ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক (এআই) চ্যাটবট। মানুষের মতো করে উত্তর দেওয়ার দক্ষতার কারণেই এ প্রযুক্তি দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।
তবে প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন—চ্যাটবট ব্যবহার করতে গিয়ে অসতর্ক হলে বড় ধরনের ঝুঁকিতে পড়তে পারেন ব্যবহারকারীরা। কারণ, চ্যাটবটের সঙ্গে আলাপ কখনোই শতভাগ গোপন থাকে না। আপনি যা লিখছেন বা নির্দেশ দিচ্ছেন, তা সংরক্ষণ, বিশ্লেষণ, এমনকি ভবিষ্যতে ফাঁসও হয়ে যেতে পারে। তাই কিছু বিষয় কখনোই চ্যাটবটের সঙ্গে ভাগাভাগি করা নিরাপদ নয়।
কোন তথ্যগুলো শেয়ার করা ঝুঁকিপূর্ণ?
১. ব্যক্তিগত তথ্য
পুরো নাম, ঠিকানা, ফোন নম্বর কিংবা ই-মেইল—একেকটা তথ্য আলাদা করে নিরীহ মনে হলেও একসাথে এগুলো দিয়ে সহজেই আপনার অনলাইন পরিচয় বের করা যায়। ফাঁস হলে প্রতারণা বা ফিশিংয়ের শিকার হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়।
২. আর্থিক তথ্য
ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, ক্রেডিট কার্ড নম্বর, এনআইডি ইত্যাদি তথ্য সাইবার অপরাধীদের কাছে সবচেয়ে মূল্যবান। এগুলো শেয়ার করলে মারাত্মক অপব্যবহার হতে পারে।
৩. পাসওয়ার্ড
চ্যাটবটে কখনোই পাসওয়ার্ড লিখবেন না। এতে ই-মেইল, ব্যাংক বা সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট হ্যাক হওয়ার ঝুঁকি থাকে। এর পরিবর্তে পাসওয়ার্ড ম্যানেজার ব্যবহার করুন।
৪. গোপন আলাপ বা স্বীকারোক্তি
অনেকে চ্যাটবটকে বন্ধু ভেবে মনের কথা বলেন। কিন্তু এগুলোও সংরক্ষিত থাকে এবং ভবিষ্যতে প্রকাশ হয়ে যেতে পারে।
৫. স্বাস্থ্য-সংক্রান্ত তথ্য
প্রেসক্রিপশন, চিকিৎসার ইতিহাস বা স্বাস্থ্যবিমার তথ্য কখনোই শেয়ার করবেন না। এগুলো চুরি হলে বড় ধরনের সমস্যা তৈরি করতে পারে।
৬. অশ্লীল বা আপত্তিকর কনটেন্ট
যৌন, অবমাননাকর বা বেআইনি কোনো তথ্য শেয়ার করলে তা রেকর্ড হয়ে ভবিষ্যতে আপনাকেই বিপদে ফেলতে পারে।
৭. কর্মক্ষেত্রের গোপন তথ্য
প্রতিষ্ঠানের নথি, পরিকল্পনা বা কৌশল চ্যাটবটে পেস্ট করলে তা ফাঁস হয়ে বড় ক্ষতি হতে পারে।
৮. আইনি তথ্য বা মামলা সংক্রান্ত কাগজপত্র
চুক্তি, মামলা বা আইনি পরামর্শের জন্য চ্যাটবট ভরসাযোগ্য নয়। ভুল বা অসম্পূর্ণ তথ্য ভবিষ্যতে আপনার বিপদ ডেকে আনতে পারে।
৯. সংবেদনশীল ছবি বা নথি
পাসপোর্ট, এনআইডি, ড্রাইভিং লাইসেন্স কিংবা ব্যক্তিগত ছবি আপলোড করলে এগুলো জালিয়াতি বা চুরির কাজে ব্যবহার হতে পারে।
১০. যেটি আপনি প্রকাশ হতে দিতে চান না
যে কোনো তথ্য, ছবি বা লেখা যদি আপনি চান না ভবিষ্যতে অনলাইনে ছড়িয়ে পড়ুক, তাহলে সেটি কখনোই চ্যাটবটে শেয়ার করবেন না।

