ঢাকা অফিস || ভয়েজ অফ জাস্টিস

আগামী বছরও মাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের হাতে সময়মতো পাঠ্যবই তুলে দেওয়া নিয়ে বড় চ্যালেঞ্জ দেখা দিয়েছে। বছরের একেবারে শেষ সময়ে এসে মাধ্যমিক ও সমপর্যায়ের প্রায় ২১ কোটি বইয়ের পুনঃদরপত্র প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
ইতিমধ্যে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির বইয়ের জন্য নতুন দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। তবে বই ছাপার কাজ এখনো কেবল দরপত্র পর্যায়ে থাকায় তা সময়সাপেক্ষ হয়ে পড়ছে। ফলে শিক্ষার্থীরা নতুন শিক্ষাবর্ষের শুরুতে বই হাতে পাবে কিনা, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। যদিও এবার আন্তর্জাতিক দরপত্রের পরিবর্তে স্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকেই কাজ দেওয়া হচ্ছে।
প্রতিবছর জানুয়ারির প্রথম দিন পাঠ্যবই হাতে পাওয়া শিক্ষার্থীদের জন্য উৎসবে পরিণত হলেও চলতি বছর সে ধারাবাহিকতা নষ্ট হয়। অনেক শিক্ষার্থীকে মার্চ-এপ্রিল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছিল। এই অভিজ্ঞতা থেকে এনসিটিবি এবার আগেভাগেই রোডম্যাপ অনুযায়ী কাজ শুরু করে। কিন্তু ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণির বই ছাপার অনুমোদন না দেওয়ায় আবারও জটিলতা তৈরি হয়। নবম-দশম শ্রেণির ক্ষেত্রেও একই সমস্যা দেখা দিতে পারে।
গত ২৬ আগস্ট ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটি পিপিআর বিধি সংশোধন করে দরপত্র জমা দেওয়ার সময়সীমা ৪২ দিন থেকে কমিয়ে ১৫ দিন করেছে। এরপরও চুক্তি, অনুমোদন ও ছাপা–সব মিলিয়ে সময়ক্ষেপণের কারণে অক্টোবরের আগে কাজ শুরু হওয়ার সম্ভাবনা কম। এতে জানুয়ারির শুরুতে বই হাতে দেওয়া বেশ কঠিন হয়ে দাঁড়াবে।
এনসিটিবির সদস্য ড. রিয়াদ চৌধুরী বলেন, এ বছর বইয়ের সংখ্যা কিছুটা কমেছে এবং প্রেসের সংখ্যাও বেড়েছে। প্রাথমিকের কাজ আগেই শেষ হবে। তারপরও ডিসেম্বরের মধ্যে মাধ্যমিকের বই ছাপা শেষ করা কঠিন হবে, তবে চেষ্টা চলছে।
সূত্র জানায়, ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণির বই ছাপতে তিনটি প্রস্তাব ক্রয় কমিটিতে উত্থাপিত হলেও নানা অভিযোগে তা অনুমোদন পায়নি। অথচ প্রাথমিক পর্যায়ের ৯ কোটি বইয়ের প্রস্তাব ইতিমধ্যেই অনুমোদন পেয়েছে।
এদিকে বই ছাপাকে ঘিরে রাজনৈতিক প্রভাব, নিম্নমানের কাগজ ও সিন্ডিকেটের অভিযোগও উঠেছে। চলতি বছর প্রায় ৪০টি প্রেস নিম্নমানের বই সরবরাহ করলেও তা টিকিয়ে রাখা হয়েছিল মনিটরিং এজেন্সির যোগসাজশে। আবার আওয়ামীপন্থী মালিকানাধীন কয়েকটি প্রেস বিপুল কাজ পাওয়ায় প্রশ্ন উঠেছে স্বচ্ছতা নিয়ে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আগের দরপত্র বাতিল হলেও নতুন প্রক্রিয়ায় একই প্রভাবশালী প্রেস মালিকরা অংশ নেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। তবে যাদের সরাসরি রাজনৈতিক পদ-পদবি আছে, তাদের কাজের বাইরে রাখার চেষ্টা চলছে।

